কেন চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে আসেননি তারা?

বিষয়টি চোখে লাগার মত। এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে ছিল না চলচ্চিত্র তারকাদের জমকালো উপস্থিতি। আসেননি সময়ের সেরা তারকা শাকিব খান, দেশে থাকা সত্ত্বেও। ছিলেন না সোহেল রানা, কবরী, মৌসুমী, ওমর সানী, শাবনূর, পরীমনি, বাপ্পী, বিদ্যা সিনহা মিম, বুবলী, মাহিয়া মাহি, জয়া আহসান।

চোখে পড়েনি নায়করাজ রাজ্জাক পরিবারের কাউকে, এটিএম শামসুজ্জামান, ওয়াসিমসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন না। দেখা যায়নি চলতি প্রজন্মের অনেক নায়ক ও নায়িকা, গায়ক-গায়িকাদের।

সংগীত ভুবনের কিংবদন্তি সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, কনক চাপা, এন্ড্রু কিশোর, আইয়ূব বাচ্চুসহ চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এমন বরেণ্য শিল্পীদের দেখা মেলেনি অনুষ্ঠানে। চলচ্চিত্রের এমন অনেক মানুষ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পর্যন্ত পাননি বলেও অভিযোগ উঠেছে।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, ‘এটা অত্যান্ত দু:খজনক ব্যাপার। আমাদের অনেক কিংবদন্তী ও জনপ্রিয় শিল্পীরা দাওয়াত পাননি। তাহলে এই অনুষ্ঠান কাদের জন্য? ব্যাপারটি লজ্জার হয়ে গেছে। এবারের আয়োজনটি খুব একটা গোছানো ছিলো না।

চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদানের আয়োজন হওয়া উচিত জাঁকজমকপূর্ণ। কিন্তু তারকাদের উপস্থিতি না থাকলে সেটা ম্লান মনে হয়। তবে আমাদের চলচ্চিত্রের দুই কিংবদন্তি ফারুক ও ববিতাকে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়েছে। এটাতে আমরা সবাই উদযাপন করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘এটা চলচ্চিত্রের অনুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের দিয়ে ক্ল্যাসিক নাচ ও টিভি শিল্পীদের পরিবেশনা প্রাসঙ্গিক মনে হয়নি। প্রায় আধা ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে তাদের। অথচ এই সময়টাতে চলচ্চিত্রের উপর তথ্যচিত্র দেখানো যেত।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাস, ঐতিহ্য, নায়করাজ, জসীম, সালমান শাহ, জাফর ইকবাল, দিতিসহ যাদের আমরা হারিয়েছি তাদের উপর আলোকপাত করা যেত। কিন্তু সেটি হয়নি। চলচ্চিত্রের মানুষ ছিল না। সব জায়গায় শুধু বিটিভির ব্যাচ পড়া মানুষের সমাগম।’

এছাড়াও আয়োজনে অতিথিদের ভুগতে হয়েছে খাবারের জন্যও। বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলেছে অনুষ্ঠান। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অনুষ্ঠানস্থলে থাকতে হয়েছে অতিথিদের। এখানে ছিলো অনেক শিশু, ছিলেন অনেক বয়স্ক মানুষও। এই দীর্ঘ সময় খাবার জন্য পানিও পাওয়া যায়নি। অনেকেই পানির পিপাসায় ভুগছিলেন। লম্বা সময়ের এই আয়োজনে অন্তত পানির ব্যবস্থা থাকা উচিত। এ নিয়েও অনেকে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।

তবে সৌন্দর্য্যও ছিল চোখে পড়ার মত। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে অসীন গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তাকে সেরা গীতিকার নির্বাচন করে সরকারের উদারতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। নন্দিত এই গীতিকারের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু পুরস্কারই তুলে দেননি। হাসিমুখে কুশল বিনিময় করেছেন। মুগ্ধতা ছড়িয়েছে দৃশ্যটি।